নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে একাধিক ইউজার আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কনটেইনার খালাসের ঘটনায় ১০ জন কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ৫ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমিশনের উপপরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম। তিনি জানান, শিগগিরই মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ের করা হবে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাসুদেব পাল, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, দিদারুন নবী, সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রনি বড়ুয়া ও মো. আরিফুর রহমান। এছাড়া বর্তমান রাজস্ব কর্মকর্তা ফারহানা আকরাম ও মো. মাহবুবুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন অন্তরা করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. মুশতাক খান, মেসার্স এ অ্যান্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের অংশীদার মো. আবদুল জলিল আকন ও মো. আলতাফ হোসেন, মেসার্স প্যান বেঙ্গল এজেন্সির মো. সেলিম, এবং জিআর ট্রেডিং করপোরেশন সিঅ্যান্ডএফ লিমিটেডের মো. আব্দুল রহিম।
দুদক জানায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা অনুযায়ী প্রতারণা, আত্মসাৎ, জালিয়াতি, নথি জাল করা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর সংশ্লিষ্ট ধারায়ও মামলা অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যবহৃত অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে একাধিক কর্মকর্তার ইউজার আইডি হ্যাক করে প্রায় চার হাজার বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে অসংখ্য কনটেইনার খালাসের ঘটনা ২০১৮ সালে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তদন্তে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তাদের আইডি ব্যবহার করে অবৈধভাবে পণ্য খালাসের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়।
দুদক মনে করছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করেছেন—যার প্রমাণ মিলেছে প্রাথমিক অনুসন্ধানে।