জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন শুরুর আগেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও পর্তুগাল। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুই দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিতে পারে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে আরও বেশ কয়েকটি দেশ একই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব স্বীকৃতির মাধ্যমে গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ বাড়ানো হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রোববার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর আগে জুলাইয়ে স্টারমার বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পথে দৃশ্যমান অগ্রগতি না করে, তবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সময়েই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য।
তবে ইসরায়েল এই উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার শামিল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, আজই তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। জুলাইয়ে তারা এই সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়, ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং বারবার ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের হুমকির প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এএফপির মতে, ফ্রান্স, কানাডা ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। তবে ইসরায়েল এই সম্ভাবনারও কড়া বিরোধিতা করছে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পশ্চিম তীর দখলের হুমকি দিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার এক বক্তব্যে বলেন, “ইসরায়েলের প্রতিশোধের আশঙ্কায় বিশ্ব যেন ভয় না পায়।”
গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের সহায়তায় পরিচালিত এক জরিপে গাজার কিছু অংশে ‘দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি’ বিদ্যমান বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা ‘অভূতপূর্ব শক্তি’ প্রয়োগ করে গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা করছে।
এএফপির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হয়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬৫,২০৮ জন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।