ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকার “অত্যন্ত সীমিত পদক্ষেপ” নিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত ২০২৪ সালের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার দপ্তরটির ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বেআইনি আটক, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা, সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও সাংবাদিক নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় সরকারের প্রতিক্রিয়া খুবই দুর্বল বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে চলমান সংঘাতের বিষয়টি বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এ সংঘাতের ফলে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত অন্তত ৪৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সরকারের ব্যর্থতায় শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলো পুলিশ স্টান গান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে দমন করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কারফিউ জারি করে এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একটি পর্যবেক্ষণ প্যানেল গঠন করা হয়, যা এখনও কাজ করছে।
প্রতিবেদনে ভারতে আরও যেসব গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: বিচারবহির্ভূত হত্যা ও বেআইনি আটক, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হুমকি, জোরপূর্বক গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ, মাওবাদী গোষ্ঠীর মাধ্যমে শিশুদের নিয়োগ।
এছাড়া, জম্মু-কাশ্মির ও মাওবাদী সহিংসতা–প্রবণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বলা হয়, ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মিরে ২০ জন নিরাপত্তা সদস্য ও ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের শনাক্ত ও শাস্তির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার “খুবই সীমিত ও অপ্রতুল” পদক্ষেপ নিয়েছে—এমন মূল্যায়ন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনে।