November 24, 2025, 3:22 am

অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের

  • Update Time : Thursday, August 14, 2025
  • 30 Time View

চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষাপটে আত্মরক্ষায় অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

এই নির্দেশনা আসে চট্টগ্রাম নগরীর ঈশান মিস্ত্রির ঘাট এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ ওরফে রানা গুরুতর আহত হওয়ার পর। সেদিন রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একটি ঝটিকা মিছিলের খবর পেয়ে এসআই রানা ও তার সহকর্মীরা সল্টগোলা এলাকায় অভিযানে গেলে হামলার শিকার হন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রানার মাথায় গুরুতর জখম হয়।

এরপর পুলিশের যৌথ অভিযানে ওই এলাকা থেকে কিরিচ, ছুরি ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্রসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিএমপি কমিশনার তার বার্তায় বলেন, “পুলিশের টহল বা অভিযানের সময় কেউ অস্ত্র বের করলে—তা ধারালো হোক বা আগ্নেয়—তাৎক্ষণিকভাবে গুলি চালাতে হবে। আত্মরক্ষা সকল পুলিশ সদস্যের সাংবিধানিক অধিকার। অস্ত্র বের করার মুহূর্তেই প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে, দেরি করা যাবে না।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু রাবার বুলেটে কাজ হচ্ছে না। পরিস্থিতি প্রতিদিনই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এখন থেকে পেট্রোল, মোবাইল ও ডিবির টিমসহ সব ইউনিট আগের মতো লাইভ অ্যামুনিশন ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে।”

ওয়ারলেস বার্তায় সিএমপি কমিশনার বলেন, “যে পরিস্থিতিতে বন্দর থানার এসআই রানা পড়েছেন, সেখানে পুলিশ দলের কেউ পড়লে তারা যেন ‘লাশ ছাড়া ফেরে না’। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”

বন্দর জোনের উপকমিশনার মো. আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আহত এসআই রানা বর্তমানে শঙ্কামুক্ত এবং তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এই কড়া নির্দেশনায় পুলিশের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, এখনো অনেকেই গত বছরের সহিংসতা ও পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনায় মানসিক ট্রমায় আছেন।

তাদের ভাষায়, “নির্দেশনা থাকলেও গুলি চালানো সহজ সিদ্ধান্ত নয়। পরে তদন্ত, জিজ্ঞাসাবাদ, এমনকি বিচারিক ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। আবার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কারণ অভিযানে গেলে জনতার দলগত প্রতিক্রিয়াও থাকে।”

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে সহিংসতায় পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা হয়। থানা, ফাঁড়ি, গাড়ি ও অস্ত্রাগার লুট হয়। প্রাণ হারান ৪৪ জন পুলিশ সদস্য। এরপর থেকেই পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র ব্যবহারে সতর্ক হয়ে উঠেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক হামলাগুলোর প্রেক্ষিতে আবারও আগের মতো অস্ত্র বহনের নীতিতে ফিরে যাচ্ছে পুলিশ।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com