কিডনি আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ছাঁকনি। এটি শরীরের নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য ও অতিরিক্ত তরল ছেঁকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। পাশাপাশি, কিডনি শরীরের ইলেকট্রোলাইট ও তরলের ভারসাম্য ঠিক রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের দেহকে রাখে কর্মক্ষম ও সতেজ।
কিন্তু কিডনি ভালো রাখতে শুধু ওষুধ নয়, দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাসও। মার্কিন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ডা. এরিক বার্গ এমনই তিনটি খাবারের কথা বলেছেন, যেগুলো নিয়মিত খেলে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
১. শসা:
শরীর সজীব রাখতে চাইলে পানির বিকল্প নেই—আর শসা এই কাজে অনন্য। প্রায় ৯৫% পানি দিয়ে গঠিত শসা শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং ইউরিক অ্যাসিড ও ক্রিয়েটিনিনের মতো বর্জ্য শরীর থেকে বের করতে সহায়তা করে।
শসার আরও একটি ভালো দিক হলো—এতে ক্যালোরি খুব কম। ফলে বেশি খেলেও ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। শসা সালাদে, পানীয়তে বা কাঁচা খাওয়ার মতো নানা উপায়ে খাদ্যতালিকায় রাখা যায়।
২. লেবু:
লেবুর রসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড, যা কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন আধা কাপ লেবুপানি পান করলে প্রস্রাবে সাইট্রেটের মাত্রা বাড়ে, যা ক্যালসিয়াম পাথর তৈরিতে বাধা দেয়।
লেবুপানি বা লেবু–চা নিয়মিত খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও কমে, যা কিডনির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের পেটে গ্যাস বা অ্যাসিডের সমস্যা আছে, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩. পার্সলি:
ধনেপাতার মতো দেখতে পার্সলি হলো একধরনের ঔষধি গাছ, যার পাতায় রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুণ। এটি শরীরে অক্সিডেটিভ চাপ কমায়—যা কিডনির ক্ষতির অন্যতম কারণ।
পার্সলিতে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিজ্জ যৌগ—অ্যাপিজেনিন, লিউটিওলিন ও কোয়ার্সেটিন, যা দেহের প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, পার্সলি কিডনির পাথর কমাতে, বর্জ্য অপসারণে এবং প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়াতে সহায়ক।
২০২৪ সালের একটি গবেষণা বলছে, পার্সলি কেবল কিডনি ভালো রাখে না, বরং বিপাকক্রিয়া বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধেও কাজ করে।
কিডনি সুস্থ রাখতে এখন থেকেই আপনার খাদ্যতালিকায় এই তিনটি উপাদান—শসা, লেবু ও পার্সলি—সংযুক্ত করুন। শরীর থাকবে সুস্থ, মন থাকবে ফুরফুরে!