হীরা—শুধু একটি রত্ন নয়, বরং রাজকীয়তা, সৌন্দর্য ও মূল্যবান ঐতিহ্যের প্রতীক। যুগে যুগে এটি রাজমুকুটে শোভা পেয়েছে, আবার শিল্পক্ষেত্রেও পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হীরার প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবহৃত হয় শিল্প উৎপাদনে, আর বাকি অংশ জুড়ে থাকে গয়না আর বিলাসবহুল বাজারে।
২০২০ সালে সারা বিশ্বে খনি থেকে উত্তোলিত হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি ২০ লাখ ক্যারেট হীরা। ফ্রান্সের বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট Futura Sciences প্রকাশ করেছে সেই বছরের তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০ হীরা উৎপাদনকারী দেশের তালিকা। চলুন এক নজরে জেনে নিই এই ঝলমলে রত্নের উৎসস্থলগুলোর অজানা গল্প—
রাশিয়া — শীর্ষে একচেটিয়া আধিপত্য
রাশিয়া বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ হীরা উৎপাদনকারী দেশ। দেশটির আলরোসা (ALROSA) কোম্পানি একাই বিশ্বের প্রায় ২৭% হীরা সরবরাহ করে।
উৎপাদন (২০২০): ২ কোটি ৩০ লাখ ক্যারেট
বতসোয়ানা — আফ্রিকার হীরার রাজা
বিশ্বখ্যাত জওনেং খনি এখানেই অবস্থিত, যা সরকার ও ডি বিয়ার্সের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত।
উৎপাদন (২০২০): ১ কোটি ৬০ লাখ ক্যারেট
কানাডা — বরফ ঢাকা রত্নের রাজ্য
মাত্র ১৯৯৮ সালে হীরার বাণিজ্যিক উত্তোলন শুরু হলেও কানাডা দ্রুত উঠে আসে শীর্ষে। মূলত দেশের উত্তরের দুর্গম অঞ্চলেই অবস্থিত মূল্যবান খনিগুলো।
উৎপাদন (২০২০): ১ কোটি ৩০ লাখ ক্যারেট
অ্যাঙ্গোলা — শতবর্ষ পুরনো রত্নভাণ্ডার
অ্যাঙ্গোলার লুলো খনি থেকে পাওয়া গেছে বহু দুর্লভ ও দামি হীরা।
উৎপাদন (২০২০): ৮৫ লাখ ক্যারেট
দক্ষিণ আফ্রিকা — ইতিহাস ও গুণগত মানের যুগলবন্দি
বিশ্ববিখ্যাত কালিনান খনি এখানেই, যা নীল হীরার জন্য বিখ্যাত।
উৎপাদন (২০২০): ৭৭ লাখ ক্যারেট
কঙ্গো (ডিআরসি) — পরিমাণে এগিয়ে, মানে পিছিয়ে
হীরার মান তুলনামূলকভাবে কম হলেও, কঙ্গো উৎপাদনে এক উল্লেখযোগ্য নাম।
উৎপাদন (২০২০): ৩৭ লাখ ক্যারেট
সমুদ্রতলের হীরার রাজ্য
নামিবিয়ার হীরা মূলত উপকূলীয় বালুর নিচ থেকে উত্তোলন করা হয়, বর্তমানে চলছে পানির নিচে খনন।
উৎপাদন (২০২০): ১৯ লাখ ক্যারেট
লেসোথো — গুণমানে শীর্ষে
লেটসেং খনি থেকে পাওয়া যায় বিশ্বের সেরা মানের বড় হীরা।
উৎপাদন (২০২০): ১১ লাখ ক্যারেট
অস্ট্রেলিয়া — গোলাপি হীরার শেষ অধ্যায়
বিশ্ববিখ্যাত আর্গাইল খনি থেকে পাওয়া গোলাপি হীরা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। তবে ২০২০ সালে এই খনি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
উৎপাদন (২০২০): ৩ লাখ ৪০ হাজার ক্যারেট
১০. তানজানিয়া — ঐতিহাসিক উইলিয়ামসন খনি
দেশটির প্রাচীন উইলিয়ামসন খনি এখনো সক্রিয় রয়েছে, এখান থেকেই আসে বেশিরভাগ হীরা।
উৎপাদন (২০২০): ২ লাখ ৬০ হাজার ক্যারেট