জুলাই সনদের প্রতিটি কথাকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ যেন কেবল একটি ঘোষণাপত্রেই সীমাবদ্ধ না থাকে। এটি হতে হবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়নের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি এবং আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গীকারের মূল দলিল।”
আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এনসিপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে তিনি আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আখতার হোসেন বলেন, “জুলাই সনদ একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটিকে শুধু কাগজে রেখে দেওয়া যাবে না। সরকারকে আহ্বান জানাই—এই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিন। ‘লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার’ জারি করে সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করুন।”
তিনি আরও বলেন, “মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তত্ত্বাবধানে কার্যকর করতে হবে। এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে হবে।”
সচেতন নাগরিকদের অংশগ্রহণকে এই রূপান্তরের চালিকাশক্তি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “দেশের প্রতিটি মানুষকে এই সনদের প্রহরী হতে হবে। তাদের সচেতনতা, প্রশ্ন এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সত্যিকারের নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।”
আখতার হোসেন বলেন, “২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন রাজনৈতিক প্রজন্মের জন্ম হয়েছে—যাদের শক্তি তাদের দায়বদ্ধতা ও নৈতিক দায়িত্ববোধ। দেশ কোনো বিপদের মুখে পড়লে, এই প্রজন্ম জীবন দিয়ে তা প্রতিরোধ করবে। এখন সময় নিজেদের জবাবদিহির কাঠামোয় আনা।”
তিনি বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ বাংলাদেশের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই দেশ যুগের পর যুগ নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে। শহীদেরা তাদের জীবন দিয়ে সেই অবসানের সূচনা করেছেন। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বিহারি, চাপ্পা, সাঁওতাল—সকলেই হবে সমান মর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক। বৈষম্যের কোনো জায়গা থাকবে না।”
সমাবেশের শেষ অংশে আখতার হোসেন বলেন, “আজ যে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে যুব, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সমাজের সব স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এনসিপি প্রস্তুত—একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গড়তে।”