ব্রজিলের বেলেম থেকে শাহরিয়ার আরিফ:
ভবিষ্যতের খাদ্য ব্যবস্থা গড়তে ভূমি পুনরুদ্ধার ও নারীর ক্ষমতায়নে জোর, COP30-তে চালু হলো ‘RAIZ উদ্যোগ’। COP30 সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিশ্বের নেতা ও অংশীদাররা জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলিকে শক্তিশালী করা এবং বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করার লক্ষ্য নিয়ে একত্রিত হলেন। এদিনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল – কৃষি, খাদ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, মৎস্যচাষ, পারিবারিক চাষাবাদ, নারী, লিঙ্গ সমতা, আফ্রো-বংশোদ্ভূত সম্প্রদায় এবং পর্যটন।
নারীর নেতৃত্ব ও ব্রাজিল প্রোটোকল
আজকের কর্মসূচিতে দেখানো হলো, কীভাবে ভূমি পুনরুদ্ধার, নারীর নেতৃত্ব বৃদ্ধি এবং বাস্তব, বিজ্ঞান-ভিত্তিক সমাধানগুলির প্রসারের মাধ্যমে জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলিকে কৃষক, পরিবার এবং প্রথম সারির ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জন্য দৃশ্যমান উন্নতিতে রূপান্তরিত করা যায়।
দিনের শুরুতে সেই সকল নারীর বক্তব্য শোনা হয়, যারা তাদের অঞ্চলে প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করছেন এবং সম্মিলিত ভবিষ্যতের পথ দেখাতে সমাধান তৈরি করছেন। এই সময় ব্রাজিল জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতিতে নারী ও মেয়েদের জন্য জাতীয় প্রোটোকল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে, যা পুনঃনিশ্চিত করে যে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্প্রদায় সুরক্ষার জন্য লিঙ্গ সমতা অপরিহার্য।
ভূমি পুনরুদ্ধারে RAIZ উদ্যোগের সূচনা
কৃষির ওপর উচ্চ-স্তরের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে (High-Level Ministerial on Agriculture) ভূমির অবক্ষয়-এর জরুরি চ্যালেঞ্জটি কেন্দ্রে ছিল। এর প্রতিক্রিয়ায়, COP30-এর একটি বিশেষ উত্তরাধিকার হিসেবে ‘RAIZ উদ্যোগ’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো:
* অবক্ষয়িত কৃষিজমি পুনরুদ্ধার করা।
* বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা জুড়ে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।
আন্তর্জাতিক অংশীদাররাও এই উদ্যোগকে জোরদার করতে জলবায়ু-সহনশীল কৃষির জন্য নতুন বিনিয়োগ ও সরঞ্জাম ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে CCAC এগ্রিকালচার ফ্ল্যাগশিপ এবং FAST পার্টনারশিপ-কে জার্মানির পক্ষ থেকে IM-PACT সহায়তা।
সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান
দিনের সমাপ্তি ঘটে গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাকশন হাই-লেভেল ইভেন্টের মাধ্যমে, যেখানে প্রতিশ্রুতিগুলিকে পরিমাপযোগ্য অগ্রগতিতে পরিণত করার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী ‘মুতীরাও’ (সামাজিক বা সম্মিলিত প্রচেষ্টা) আহ্বান জানানো হয়।
COP30-এর এই বার্তাটি অত্যন্ত স্পষ্ট: ভূমি পুনরুদ্ধার, মানুষের ক্ষমতায়ন এবং নারী ও আফ্রো-বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরাই হলো একটি স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার মূল ভিত্তি।