নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে পাঁচ বছরে প্রায় ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা) পাচারের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ সংশ্লিষ্ট ১৭টি প্রতিষ্ঠান ও ২৮ জন ব্যক্তি।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিটটির প্রধান ছিবগাতউল্ল্যাহ জানান, তদন্ত শেষে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন পেয়েছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
তদন্তে দেখা গেছে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সালমান এফ রহমান, তার ভাই এএসএফ রহমান, এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ১৭টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এই অর্থ পাচার করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে—অ্যাডভাঞ্চার গার্মেন্টস, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, অটাম লুপ অ্যাপারেলস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটন অ্যাপারেলস, কজি অ্যাপারেলস, এসেস ফ্যাশন, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, পিংক মেকার গার্মেন্টস, প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশন ও উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।
সিআইডি জানায়, এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখা থেকে এলসি খোলা হয়, তবে রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনা হয়নি। অর্থগুলো দুবাইয়ের আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক হিসেবে নাম রয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও এএসএফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের।
ইতিমধ্যে আদালতের আদেশে আসামিদের বেশ কয়েকটি সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—ঢাকার দোহারে প্রায় ২ হাজার শতাংশ জমি ও স্থাপনা, গুলশানের ‘দ্য এনভয়’ বিল্ডিংয়ের ৬,১৮৯ বর্গফুট ফ্ল্যাট, এবং গুলশান আবাসিক এলাকার আরেকটি ২,৭১৩ বর্গফুট ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট। এসব সম্পত্তির আনুমানিক বাজারমূল্য ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া, আসামিদের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।