ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখার যত্ন শুরু হয় ভেতর থেকেই। রান্নাঘরের সাধারণ উপাদানগুলো—যেমন হলুদ, দুধ কিংবা আমলকির রস—শুধু বাহ্যিক যত্নেই নয়, বরং শরীরের ভেতর থেকে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও কার্যকর। বিশেষ করে গ্লুটাথিয়ন নামের এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
‘মাস্টার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ নামে পরিচিত গ্লুটাথিয়ন শরীরের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, বিষাক্ত উপাদান দূর করে এবং ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ রাখে। এটি ত্বকের অভ্যন্তরীণ ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে—দূষণ, সূর্যের রশ্মি কিংবা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে ত্বকে যে ক্ষতি হয়, তা মেরামতে সহায়তা করে।
ত্বকের যত্নে দামি প্রসাধনীর পরিবর্তে, গ্লুটাথিয়নসমৃদ্ধ খাবার হতে পারে প্রাকৃতিক বিকল্প। জেনে নিন কোন খাবারগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে—
পালং শাক
গ্লুটাথিয়নের অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উৎস। এতে ক্লোরোফিল ও ভিটামিন রয়েছে, যা নিস্তেজ ও ক্লান্ত ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে। প্রতিদিন এক বাটি পালং শাকের তরকারি, ডাল বা গ্রিন স্মুদি খাওয়া ত্বকের জন্য উপকারী।
পালং শাকের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল দমন করে, ফলে কোষের ক্ষতি কম হয় এবং ত্বক আরও উজ্জ্বল দেখায়। রান্নার সময় এক চিমটি লেবুর রস যোগ করলে ভিটামিন সি শোষণ বাড়ে এবং গ্লুটাথিয়নের পরিমাণ বজায় থাকে।
হলুদ ও রসুন
দুটি উপাদানই শরীরের গ্লুটাথিয়ন উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রদাহ কমায় এবং কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে। অন্যদিকে, রসুনে থাকা সালফার যৌগ লিভারের ডিটক্স প্রক্রিয়ায় গ্লুটাথিয়ন উৎপাদন বাড়ায়।
প্রতিদিনের রান্নায় রসুনের ফোড়ন দিন, অথবা এক কাপ গরম দুধে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন—ত্বক হবে আরও স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল।
পেঁপে
ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিন ও গ্লুটাথিয়নে সমৃদ্ধ পেঁপে ত্বক পুনর্গঠন এবং লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে ত্বকের নিস্তেজ ভাব কমায়।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক বাটি পাকা পেঁপে খাওয়া ত্বকের পুষ্টি ও উজ্জ্বলতা বাড়ানোর সহজ ও কার্যকর উপায়।
ত্বক সুন্দর রাখতে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, খাদ্যাভ্যাসেও নজর দিতে হয়। গ্লুটাথিয়নে ভরপুর এসব প্রাকৃতিক খাবার নিয়মিত খেলে ত্বক ভেতর থেকে পুষ্ট হয়, বাড়ে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও সতেজতা।