শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন ও সংঘর্ষের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বহুল আলোচিত ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ঘোষণায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ঘোষণায় জানানো হয়, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।”
শনিবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং বিকেলে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে রাখে।
রাত ১১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপরই আসে কোটা স্থগিতের ঘোষণা।
দিনভর চলমান উত্তেজনার মধ্যেই বিকেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও একাধিক সাংবাদিক আহত হন।
ঘটনার প্রতিবাদে রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন রাবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলিম এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তারা হামলাকারীদের শাস্তির দাবিও জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তি সুবিধা দিতে চালু করা হয় ‘পোষ্য কোটা’। এ কোটা অনুযায়ী, প্রতিটি বিভাগে নির্দিষ্ট শর্তে সর্বোচ্চ দুজন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান।
কিছুদিন আগে এ কোটা বাতিল করা হলে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও শিক্ষকরা। তাদের দাবিতে প্রশাসন কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
দুই পক্ষের টানাপড়েনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেষমেশ ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ও সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়। পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনশন চালিয়ে আসা তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।