নিজস্ব প্রতিবেদক:
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগ ও টিএসসির মধ্যবর্তী সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, পুলিশের ধাওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চারপাশে ছুটে পড়েন। এতে অন্তত ১০০ শিক্ষক আহত হন। আহতদের অনেককে সহকর্মীরা রিকশায় তুলে বা কাঁধে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগে ১০০ জনের বেশি শিক্ষক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেউ গুরুতর আহত নন। বেশিরভাগের হাঁটুর নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, অনেকে সাউন্ড গ্রেনেডের আঘাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।”
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “শিক্ষকদের একাংশ জানায় তারা শহীদ মিনারে ফিরে যাবে, কিন্তু আরেক পক্ষ ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হয়। তখনই আমরা ব্যবস্থা নিই।”
লাঠিচার্জে আহত এক শিক্ষক বলেন, “আমাদের ওপর পুলিশ হামলা করেছে, কাপড় ছিঁড়ে গেছে। আমরা শিক্ষক, আমাদের প্রতি এমন আচরণ অমানবিক।” আরেক শিক্ষক জানান, “আমি সামনে দাঁড়ানো ছিলাম, হঠাৎ সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। আমরা কোনো সংঘাতে যেতে চাই না, কিন্তু আমাদের দাবি আদায় করেই ফিরব।”
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং তারা সড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে থাকে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি—
১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ,
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান,
৩. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে চারটি সংগঠন এই আন্দোলন পরিচালনা করছে—বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।