November 23, 2025, 5:36 pm

‘আমি মেয়েদের স্বপ্ন থেমে যেতে দেব না’—ক্রীড়ানুরাগী ডিসি জাহিদুল ইসলাম

  • Update Time : Wednesday, November 5, 2025
  • 168 Time View

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জ প্রমিলা ফুটবল একাডেমির দুই ফুটবলার চরম দারিদ্র্যের কারণে খেলাধুলার পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রীড়ানুরাগী ও মানবিক জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পেরে বুধবার (৫ অক্টোবর) সরাসরি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন তারা।

প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও জেলা প্রশাসক ধৈর্য সহকারে শুনলেন দুই তরুণী ফুটবলার—স্মৃতি আক্তার ও আফরোজা আফরিন লামহার স্বপ্ন ও দূরদর্শার গল্প। তারা দুজনেই বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

প্রমিলা ফুটবলার স্মৃতি আক্তার জানান, তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রমিলা ফুটবল একাডেমির নিয়মিত খেলোয়াড়। তার বাবা আব্দুল জলিল বেকার, মা মালেকা বেগম গৃহিণী। তারা জেলার ভোলাই শান্তিনগর আলিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্মৃতি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন এবং এ বছর ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে চান। কিন্তু তার বেকার পিতার পক্ষে ভর্তি ফি দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে আর্থিক সহায়তা প্রার্থনা করেন, যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে তার পাশে দাঁড়ান এবং আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

অন্যদিকে, আফরোজা আফরিন লামহাও নারায়ণগঞ্জ প্রমিলা ফুটবল একাডেমির নিয়মিত খেলোয়াড়। তিনি আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তার মা কানিজ ফাতেমা বিথী গৃহিণী এবং বাবা আমিনুল হাসান রানা একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তারা নারায়ণগঞ্জের ১ নম্বর বাবুরাইল বউবাজার এলাকায় এক রুমের ভাড়া বাসায় থাকেন।

তিনি জানান, সংসার চালাতে তার বাবার প্রচণ্ড কষ্ট হয়, ফলে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনিও জেলা প্রশাসকের কাছে আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। জেলা প্রশাসক তাকেও নিরাশ করেননি এবং আর্থিক চেক প্রদান করেন।

চেক পাওয়ার পর স্মৃতি আক্তার বলেন, “ডিসি স্যার আমাদের পড়াশোনা ও ফুটবল খেলা চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিয়েছেন।”

আফরোজা আফরিন লামহা জানান, “ডিসি স্যার আমাদের জেলায় থাকা অন্যান্য দরিদ্র প্রমিলা ফুটবলারের খোঁজ নিয়েছেন এবং বলেছেন, যারা সমস্যায় আছে তাদের সরাসরি তার কাছে পাঠাতে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, প্রমিলা ফুটবলারদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবেন।”

এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “একজন মেয়ে শিশু যদি আর্থিক অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে না পারে, সেটি আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আজ দুইজন প্রমিলা ফুটবলার আমার কাছে এসেছিল, তাদের মাধ্যমে আরও কয়েকজন আর্থিক সংকটে থাকা খেলোয়াড়ের কথা জেনেছি। তাদেরও সাধ্যমতো সহযোগিতা করবো।”

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com