আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত সাতজন নিহত এবং ১৫০ জন আহত হয়েছেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে মাজার-ই-শরিফের কাছাকাছি এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূমি থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরে।
সামাঙ্গান প্রদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সামিম জয়ান্দা জানান, সোমবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সাতজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউএসজিএস তাদের স্বয়ংক্রিয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ‘পেজার’-এ অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। এতে জানানো হয়, প্রাণহানি ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, অতীতে এমন অ্যালার্টের ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়েছে।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
বালখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি জায়েদ জানান, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের ঐতিহাসিক ‘ব্লু মসজিদ’-এর একটি অংশ ধসে পড়েছে। শহরটির জনসংখ্যা পাঁচ লাখেরও বেশি। ভূমিকম্পের সময় অনেক বাসিন্দা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন বলে জানিয়েছে এএফপি।
চলতি বছরের ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে দুই হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। এর আগে ২০২৩ সালে হেরাত ও ২০২২ সালে নাঙ্গরহার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক প্রাণহানি ঘটে এবং হাজারো বাড়িঘর ধসে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থলে অবস্থানের কারণে আফগানিস্তান অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান ব্যাপ্টির তথ্যমতে, ১৯০০ সাল থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৭-এর বেশি মাত্রার অন্তত ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।