বাংলাদেশের পোশাক শিল্প আবারও বৈশ্বিক অঙ্গনে নতুন মাইলফলক গড়েছে। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনে নেতৃত্ব ধরে রেখে ২০২৫ সালে দেশে মোট ৩৬টি কারখানা অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ‘লিড (LEED)’ সবুজ সনদ—যা এক বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অর্জন।
এর আগে ২০২২ সালে ৩০টি কারখানা এই স্বীকৃতি পেয়েছিল। এবারের অর্জনের মাধ্যমে সেই রেকর্ড ভেঙে টেকসই উৎপাদনে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ২২টি কারখানা পেয়েছে সর্বোচ্চ ‘প্লাটিনাম’ সনদ—যা বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের পরিবেশবান্ধব ভাবমূর্তিকে আরও শক্তিশালী করেছে।
এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (USGBC)। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সনদ পেতে নির্দিষ্ট পরিবেশ ও স্থায়িত্ব সংক্রান্ত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হয়। মোট ১১০ নম্বরের মধ্যে ৮০-এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০–৭৯ নম্বর পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০–৫৯ পেলে ‘লিড সিলভার’, আর ৪০–৪৯ পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ২৬৮টি লিড সার্টিফায়েড কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১১৪টি প্লাটিনাম, ১৩৫টি গোল্ড, ১৫টি সিলভার, এবং ৪টি সার্টিফায়েড কারখানা।
বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া লিড সার্টিফায়েড কারখানার মধ্যে ৬৮টিই বাংলাদেশের—যা টেকসই পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রমাণ বহন করে।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “এই অর্জন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা এখন বিশ্বের কাছে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।”
বর্তমানে তিনি ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের এই অর্জন প্রমাণ করে, দেশের গার্মেন্ট শিল্প শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নয়, বরং টেকসই ভবিষ্যতেরও চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।