নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত এনফোর্সমেন্ট টিম রাজধানীর গুলশানের উত্তর বারিধারায় নির্মাণাধীন হাসপাতাল প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে অনিয়মের প্রমাণ পায়।
দুদক টিম দেখতে পায়, নির্মাণাধীন দুটি ভবনের একটি দুইতলা ও একটি চারতলা ভবনের কাজ দীর্ঘদিন ধরে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রকল্পের অগ্রগতি, অর্থ ব্যয় ও প্রশাসনিক অনুমোদন–সংক্রান্ত তথ্য যাচাইয়ের জন্য টিম পরে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে যায়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাপ্তরিক কাজে ঢাকার বাইরে থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। পরে টিম প্রকল্প পরিচালক ও বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন)-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহের অনুরোধ জানায়।
দুদক জানিয়েছে, প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণের পর বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হবে।
অভিযোগ অনুযায়ী, রাজধানীর গুলশানের উত্তর বারিধারায় প্রায় আট বিঘা জমিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নামে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে বিপুল অর্থ ব্যয় ও প্রকল্পে অনিয়ম। প্রথমে সেখানে প্রবাসীদের জন্য কিডনি হাসপাতাল ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পরিকল্পনা করা হলেও পরে তা পরিবর্তন করে হাউজিং প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এসব প্রকল্পে প্রায় ২৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হলেও কোনো উদ্যোগই বাস্তবায়িত হয়নি।
এরপর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড নতুন করে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডরমিটরি ও কমার্শিয়াল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) লঙ্ঘন করে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাত্র ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য বোর্ড সভা বা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই বেআইনিভাবে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। ফলে প্রবাসীদের বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এই হাসপাতাল কার্যকর সেবা দিতে না পারার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া, একটি সেবাধর্মী সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি গঠনের এই উদ্যোগ প্রশাসনিক জটিলতাও বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুদক জানিয়েছে, প্রকল্পে সরকারি অর্থের অপচয় ও অনিয়মের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।