নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার পঞ্চম অর্থঋণ আদালতে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে আদালত অবমাননার দায়ে অ্যাডভোকেট জগবন্ধু মজুমদারকে দোষী সাব্যস্ত করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিচারক মুজাহিদুর রহমান গতকাল সোমবার এক আদেশে তাঁকে এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১২ অক্টোবর এভিয়ানা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস–এর মালিক খন্দকার শামসুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক এশিয়া দায়ের করা একটি মামলার শুনানিকালে জগবন্ধু মজুমদার আদালতের প্রতি অবমাননাকর আচরণ করেন। বিচারক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং ২০ অক্টোবরের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
সূত্র আরও জানায়, মামলায় বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে জগবন্ধু আদালতের আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, বিশেষ করে ‘ডিপোজিট স্লিপ’, দাখিলে ব্যর্থ হন। পরে তিনি আদালতের ডায়াসে জোরে চাপড় মেরে একাধিকবার বিচারকের প্রতি উত্তেজনাকর ও হুমকিস্বরূপ আচরণ করেন। একপর্যায়ে তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবে অন্য মামলার প্রসঙ্গ তুলে বিচারককে “বিচারের সম্মুখীন” করার হুমকি দেন। তাঁর মারমুখী ভঙ্গিমা ও অসংযত আচরণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। উপস্থিত আইনজীবীরা তাঁকে শান্ত করতে এজলাস থেকে বের করে নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, একই মামলায় আরেক বিবাদী ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা জমা দেওয়ার মিথ্যা দাবি করে হলফনামা দিলে তদন্তে তা অসত্য প্রমাণিত হয়। এ কারণে আদালত তাঁকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জগবন্ধু মজুমদার আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে এবং কারণ দর্শানোর দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলেও, আদালত তা নাকচ করে দেন। আদেশে বলা হয়, “আদালত অবমাননা করে কেউ পার পেয়ে গেলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ব্যাহত হয় এবং বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০১২ সালে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় অ্যাডভোকেট মো. সেলিমকে ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এই আদেশ আদালতের মর্যাদা ও শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করল।