ক্রীড়া প্রতিবেদক:
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে টিকে থাকার ম্যাচে জয় ছিল বাধ্যতামূলক। ৯ বলে দরকার ছিল মাত্র ১০ রান, হাতে ৬ উইকেট, ক্রিজে সেট দুই ব্যাটার নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন আক্তার—তবু ম্যাচটি হারল বাংলাদেশ নারী দল! চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে শেষ ৯ বলে মাত্র ২ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৫টি উইকেট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ রানে এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নিল নিগার সুলতানার দল।
সোমবার (২০ অক্টোবর) ভারতের নভি মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে বোলিং করে বাংলাদেশ নারী দল শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করে ২০২ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও, নিগার ও শারমিনের দুই দারুণ ইনিংস ম্যাচকে জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়।
দুর্ভাগ্যবশত, ইনিংসের শেষ মুহূর্তে একের পর এক উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে বাংলাদেশ থেমে যায় ১৯৫ রানে।
চলতি বিশ্বকাপে এর আগেও ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় থেকে অল্প দূরত্বে গিয়ে হেরেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও সেই একই চিত্র। দ্বিতীয় ওভারেই রাবেয়া হায়দার ফিরলে চাপ বাড়ে। এরপর ফারজানা হক (৭) ও সুবহানা মুক্তারিও (৬৪) দ্রুত আউট হলে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক নিগার ও শারমিন।
চতুর্থ উইকেটে ৮২ রানের দারুণ জুটি গড়েন তারা। শারমিন আক্তার ১০৩ বলে ৪টি চার ও একটি ছয়ে করেন ৬৪ রান। অন্যদিকে নিগার সুলতানা খেলেন ৯৮ বলে ৭৭ রানের লড়াকু ইনিংস। কিন্তু শারমিন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর থেকেই এলোমেলো হতে থাকে বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ ওভারে লজ্জাজনক ব্যাটিং ব্যর্থতায় হাতছাড়া হয় জয়।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে শুরুতেই দারুণ সুইংয়ে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন ইনজুরি থেকে ফেরা পেসার মারুফা আক্তার। তবে তিনি পুরো ইনিংস খেলতে পারেননি, ৫.৪ ওভারের মাথায় উঠে যান মাঠ থেকে।
দ্বিতীয় উইকেটে লংকানরা তোলে ৭২ রান। ৪৬ রান করা অধিনায়ক আতাপাত্তুকে ফেরান রাবেয়া খান। এরপর তিনে নামা হাসিনি পেরেরা একাই গড়েন বড় ইনিংস—৯৯ বলে ১৩টি চার ও একটি ছয়ে করেন ৮৫ রান। মিডল অর্ডারে নীলক্ষীকা সিলভা করেন ৩৭ রান।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্বর্ণা আক্তার, ১০ ওভারে ২৭ রানে নেন ৩ উইকেট। রাবেয়া খান ২টি উইকেট নেন ৩৯ রান খরচে।
এই হারের ফলে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অভিযান এখানেই শেষ। তিনটি ম্যাচে হারের গল্পে অদ্ভুত মিল—সবগুলোতেই জয়ের কাছাকাছি গিয়েও হেরে যাওয়া। দলের আত্মবিশ্বাস ও ব্যাটিং লাইনআপে বড় প্রশ্ন রেখে গেল এই বিদায়।