November 23, 2025, 8:27 pm

গাজায় ফের উত্তেজনা, যুদ্ধবিরতির পর ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত

  • Update Time : Tuesday, October 21, 2025
  • 29 Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলায় ফের রক্তাক্ত হচ্ছে ফিলিস্তিন। গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় তারা যুদ্ধবিরতির ৮০টি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গাজা প্রশাসনের অভিযোগ, ইসরায়েল বেসামরিক জনগণের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা চালাচ্ছে— সরাসরি গুলিবর্ষণ, বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ ও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করার মতো নানা কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

সরকারি হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮ হাজার ২১৬ জন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৭০ হাজার ৩৬১ জন।

গাজার সাধারণ মানুষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গাজার ব্যবসায়ী আবু আবদুল্লাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “যেভাবে সহিংসতা শুরু হয়েছে, তাতে মনে হয়েছে যুদ্ধবিরতি খুব দ্রুতই ভেঙে পড়বে। মানুষ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে খাবার কিনতে হুড়োহুড়ি শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই অনিশ্চিত।”

গাজা শহরের বাসিন্দা মাহমুদ হাশিম বলেন, “যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেলে তা হবে একটি ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন।” অন্যদিকে খান ইউনিসের খাদিজেহ আবু-নোফাল জানান, “হাসপাতালে আহত শিশুদের চিকিৎসার সময়ও সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। তাহলে শান্তি কোথায়?”

আলজাজিরা ও এপি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মাঝেও ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। যদিও ইসরায়েল দাবি করছে, হামাস তাদের বাহিনীর ওপর হামলা করায় প্রতিক্রিয়ায় এসব হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করে দিয়েছে এবং ত্রাণ পুরোপুরি বন্ধেরও হুমকি দিয়েছে। ফলে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে গাজাবাসীর মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। হামলার জন্য হয়তো সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা দায়ী হতে পারে, সরাসরি হামাস নয়।” এদিকে ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইতোমধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। তারা যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হামাসের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল কায়রোতে পৌঁছেছে। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে তারা যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পর্যায়ক্রমিক প্রত্যাহার এবং যুদ্ধপরবর্তী শাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করবেন।

বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি এখন এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। গাজাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো সময় আবারও বড় ধরনের সহিংসতা শুরু হতে পারে।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com