বিনোদন ডেস্ক:
চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। একইসঙ্গে মামলাটি নতুন করে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)।
সালমান শাহর ভক্ত রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদের দেওয়া জবানবন্দিকে সাক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতেও বলা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এই আদেশ দেন। সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই সিদ্ধান্ত নেয়।
আদেশে বিচারক বলেন, “এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। এর পেছনের রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে মামলাটি পুনরায় তদন্ত প্রয়োজন।”
এর আগে ২০২২ সালের ১২ জুন ঢাকার এক মহানগর হাকিম আদালত পিবিআই’র দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের আদেশ দেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধেই পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন সালমান শাহর মা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা—পিবিআই পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন, যেখানে বলা হয় সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন; তাকে হত্যা করা হয়নি।
এর আগে পুলিশের ডিবি, সিআইডি ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও একই রকম প্রতিবেদন দেয়। তবে সালমান শাহর পরিবার এসব প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসছিল।
সালমান শাহ, যার পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন, নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে ঢাকার ইস্কাটনের নিজ বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে।
মৃত্যুর পরপরই তার বাবা একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৭ সালে রেজভী আহমেদ নামে এক ভক্তকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন।
২০১৬ সালে একটি আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দায়িত্ব নেয়। তদন্তে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা শাস্তির মুখোমুখিও হন।
সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা বিতর্ক ও রহস্য এখন নতুন করে তদন্তের আলোয় সামনে আসতে যাচ্ছে।