November 24, 2025, 12:35 am

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি বাড়ছে

  • Update Time : Tuesday, October 21, 2025
  • 36 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন থেকে নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করলেই টিউশন ফি বাড়াতে পারবে—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সোমবার (২০ অক্টোবর) পার্লামেন্টে দেওয়া ঘোষণায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন জানান, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া শিক্ষাবর্ষসহ পরবর্তী দুই বছর মুদ্রাস্ফীতির হারে ফি বাড়ানোর সুযোগ থাকবে শুধুমাত্র সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের, যারা উচ্চমানের শিক্ষা ও ফলাফল নিশ্চিত করতে পারবে।

সরকারের নতুন ‘পোস্ট-১৬ শিক্ষা ও দক্ষতা শ্বেতপত্রে’ বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বিত হবে, তবে সেটি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান ও শিক্ষার্থীদের সাফল্যের ওপর।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বিশ্বমানের শিক্ষা দিতে না পারলে সর্বোচ্চ ফি নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। শিক্ষার্থীদের অর্থ যেন সঠিকভাবে বিনিয়োগ হয়, সেটি নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।”

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই ইংল্যান্ডে টিউশন ফি ৮ বছর পর প্রথমবারের মতো বাড়ানো হয়, যা বর্তমানে বার্ষিক গড় হিসেবে দাঁড়িয়েছে ৯,৫৩৫ পাউন্ডে। তবে শিক্ষা খাতে আর্থিক চাপ বাড়ায় সরকারের সহায়তা ছাড়া ৪৩ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় লোকসানে পড়বে বলে জানিয়েছে উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় রক্ষণাবেক্ষণ ঋণও প্রতিবছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করা হবে। এতে নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ সহায়তা পাবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবস্থার ওপরও কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা এসেছে। এই ব্যবস্থায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তাদের কোর্স পরিচালনার অনুমতি দেয়, যা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার জানায়, এর ফলে সরকারি অর্থ অপব্যবহার ও ভর্তির অনিয়ম রোধ করা যাবে।

সংস্কার পরিকল্পনায় পেশাভিত্তিক শিক্ষার উন্নয়নে চালু হতে যাচ্ছে নতুন “V-level” কোর্স, যা A-level ও T-level–এর পাশাপাশি চলবে। তবে শিক্ষাবিদদের মতে, এই পরিবর্তনে জনপ্রিয় BTEC কোর্সগুলো বাদ পড়তে পারে, যা সামাজিক গতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার আরউইন বলেন, “এই ধরনের পরিবর্তন শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান অস্থির পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।”

নতুন নীতিমালায় GCSE-তে গণিত ও ইংরেজিতে ব্যর্থ শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক পুনঃপরীক্ষার নিয়মে শিথিলতা আনার কথাও বলা হয়েছে। এতে ‘স্টেপিং স্টোন’ নামে একটি প্রস্তুতিমূলক কোর্স চালু হবে, যা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে।

ইউনিভার্সিটিজ ইউকের প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আজকের শ্বেতপত্র বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার জন্য একটি নতুন সূচনা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে টিকে থাকতে হলে সর্বোচ্চ মানে পৌঁছাতে হবে।”

সার্বিকভাবে, সরকারের এই সংস্কারকে শিক্ষা খাতের মানোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক টেকসইতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে শিক্ষাবিদদের মতে, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ মনোযোগ ও সতর্কতা জরুরি।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com