নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।
এই কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। টিকাদান কার্যক্রম চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকা নিতে শিশুদের জন্মসনদ থাকা বাধ্যতামূলক নয়। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদিত টাইফয়েড টিকা গ্যাভি জোটের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানান, “এই টিকা অত্যন্ত নিরাপদ। নেপাল, পাকিস্তানসহ বিশ্বের আটটি দেশে এটি ব্যবহৃত হয়েছে, এবং এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।”
টাইফয়েডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ এখনো শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ সার্ভে ২০২১’-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার জনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুবরণকারীদের ৬৮ শতাংশই শিশু।
এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে শিশুদের সুরক্ষায় সরকার প্রথমবারের মতো এই বিশেষ টিকাদান উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এক মাসের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য দেশের ইতিহাসে একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে।