২০২৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন খ্যাতিমান বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমর এম ইয়াগি। তাদের উদ্ভাবিত ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস’ (MOFs) বা ধাতব-জৈব কাঠামোর জন্য সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাদের এ সম্মাননা দিয়েছে।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিজ্ঞানীরা এমন আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যেগুলোতে রয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ছিদ্র, যার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গ্যাস এবং রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এসব কাঠামোতে ধাতব আয়ন ও জৈব অণুর সংযোগে তৈরি হয় একধরনের স্ফটিক, যার ভেতরে ফাঁপা গহ্বর থাকে। এভাবেই গঠিত হয় MOFs।
এই কাঠামো দিয়ে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ, পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড আটকে রাখা, বিষাক্ত গ্যাস শোষণ এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্রুততর করা যায়। MOFs-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো—এই কাঠামো সহজেই পরিবর্তনযোগ্য। ফলে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রয়োজনে কাঠামো কাস্টমাইজ করে নির্দিষ্ট পদার্থ সংরক্ষণ বা বিক্রিয়ায় ব্যবহার করতে পারেন।
তিন বিজয়ীর মধ্যে সুসুমু কিতাগাওয়া জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, রিচার্ড রবসন অধ্যাপনা করেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ওমর এম ইয়াগি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক।
রসায়নে এ পর্যন্ত মোট ১১৬ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সে (৯৭ বছর) এই পুরস্কার লাভ করেন জন বি. গুডএনাফ (২০১৮), আর সবচেয়ে কম বয়সে (৩৫ বছর) পুরস্কার জেতেন ফেদ্রিক জোলিয়ট (১৯৩৫)।
উল্লেখ্য, ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। ডিনামাইট আবিষ্কারক সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের উইল অনুযায়ী, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য ও শান্তি এই পাঁচটি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের প্রতি বছর এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি বিভাগ।