আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির মাধ্যমে দেশে দলীয় স্বৈরতন্ত্র ও ব্যক্তি স্বৈরতন্ত্রের ঝুঁকি বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব: অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নাকি রাজনৈতিক অস্থিরতার পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল’ স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স, সংগঠনটির ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা ১৯৭০ সাল থেকেই ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ ভিত্তিক সরাসরি নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করে এসেছি। এই ব্যবস্থার মাধ্যমেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। অথচ এখন পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে সেই জনগণের অধিকারকে অস্বীকার করা হচ্ছে। এটি একটি দলনির্ভর স্বৈরশাসনের পথ খুলে দেবে।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “পিআর চালু হলে জনগণ জানবে না কে তাদের সংসদ সদস্য হবে। প্রতীককে ভোট দেওয়ার পর দল বা দলীয় শীর্ষ নেতারা মনোনয়ন দেবেন—এতে ব্যক্তি নয়, দল হবে মুখ্য। জনগণ কাকে ভোট দিল, সে বিষয়ে জবাবদিহিতার সুযোগ থাকবে না।”
পিআর পদ্ধতিতে সরকার গঠনে জোট ও সমঝোতার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের অনিশ্চয়তার সুযোগ নেবে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র কিংবা বাংলাদেশের অকল্যাণে যারা আগ্রহী।”
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, “উন্নত অনেক দেশ পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করে ঠিকই, কিন্তু তারা জনসংখ্যা, অবকাঠামো ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশে এখনও স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী নয়, ফলে পিআর বাস্তবায়ন আমাদের প্রেক্ষাপটে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।”
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল’ স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।