ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জিতে ইতিহাস গড়লেন উসমান দেম্বেলে। প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক জমকালো আয়োজনে ২০২৫ সালের ব্যালন ডি’অর ট্রফি তুলে দেওয়া হয় পিএসজির এই ফরোয়ার্ডের হাতে। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো এই সম্মাননা পেলেন ২৮ বছর বয়সী এই ফরাসি তারকা।
দেম্বেলে হলেন ষষ্ঠ ফরাসি ফুটবলার, যিনি ব্যালন ডি’অর জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করলেন। তার আগে রেমন্ড কোপা, মিশেল প্লাতিনি, জ্যাঁ পিয়েরে পাঁপিন, জিনেদিন জিদান ও করিম বেনজেমা এই গৌরব অর্জন করেছেন।
এবারের ব্যালন ডি’অর নিয়ে মূল লড়াই হয়েছে বার্সেলোনার বিস্ময় তরুণ লামিনে ইয়ামাল ও দেম্বেলের মাঝে। যদিও শেষ পর্যন্ত পারফরম্যান্সের ভারে এগিয়ে থেকে ইয়ামালকে পেছনে ফেলেই পুরস্কার জিতেছেন দেম্বেলে।
গত মৌসুমে দেম্বেলে পিএসজির হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। ক্লাবকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। পাশাপাশি লিগ ওয়ান ও ফরাসি কাপ জয়েও ছিল তার বড় অবদান। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৩ ম্যাচে ৩৫ গোল এবং ১৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন এই ফরোয়ার্ড। ফরাসি সুপার কাপে জয়সূচক গোলটিও এসেছে তার পা থেকে।
অন্যদিকে, লামিনে ইয়ামালও বার্সেলোনার হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়েছেন। লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে সরাসরি ভূমিকা ছিল তার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৫ ম্যাচে ১৮ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট করেছেন এই স্প্যানিশ তরুণ। তবে অল্পের জন্য দ্বিতীয় স্থানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে।
পুরস্কার গ্রহণের সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন দেম্বেলে। মঞ্চে উঠে প্রথমেই উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে থাকা মাকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমরা একসঙ্গে এটা করেছি।” পরে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে ফেলেন তিনি। সঞ্চালক কেট স্কট যখন তার মাকে মঞ্চে ডেকে আনেন, তখন নিজেকে সামলে নেন দেম্বেলে।
এরপর বলেন, “আমার ক্যারিয়ারে এটা সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর একটি। ২০২৩ সালে আমাকে দলে টানার জন্য পিএসজিকে ধন্যবাদ জানাই। আমার সতীর্থরা অসাধারণ ছিল, এই ট্রফি আমার একার নয়, আমাদের সবার অর্জন।”
তবে ব্যালন ডি’অরের রাতে দেম্বেলের সতীর্থরা সরাসরি এই আনন্দের সাক্ষী হতে পারেননি। কারণ একই সময়ে মার্শেইয়ের মাঠে লিগ ওয়ানের ম্যাচ খেলছিল পিএসজি। যদিও ওই ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হেরেছে, তবে দেম্বেলের অর্জনের পাশে সেটি খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না ফুটবলপ্রেমীদের কাছে।
উসমান দেম্বেলে এবার যেন ফরাসি ফুটবলের এক নতুন অধ্যায় লিখলেন। মেসি-রোনালদোর যুগ পেরিয়ে ফুটবল বিশ্ব এখন নতুন রাজপুত্রকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।