November 23, 2025, 8:29 pm

৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন আজ

  • Update Time : Thursday, September 11, 2025
  • 40 Time View

তিন দশকেরও বেশি সময় পর, আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। ১৯৯২ সালের পর এটিই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১১ হাজার ৯১৯ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১০২ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৮১৭ জন। একজন ভোটারকে কেন্দ্রীয় সংসদ ও নিজ নিজ হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি পদে ভোট দিতে হবে—এর মধ্যে জাকসুতে রয়েছে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৫টি পদ।

এই নির্বাচনে ৩৪০টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬২০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৪৪৮ জন ছাত্র এবং ১৭২ জন ছাত্রী। তবে হল সংসদে প্রায় ৬০ শতাংশ পদেই হয় প্রার্থী নেই, নয়তো প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ২১টি হলে ৩১৫টি পদের মধ্যে ১৩১টিতে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং ৬৮টি পদ শূন্য থাকছে।

জাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন—তাদের মধ্যে ১৩২ জন ছাত্র এবং ৪৫ জন ছাত্রী। সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী ১০ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন। নারী সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে রয়েছেন ৬ জন এবং পুরুষ এজিএস পদে ১০ জন প্রার্থী। অন্যান্য পদেও রয়েছেন একাধিক প্রার্থী।

হলভিত্তিক ভোটার সংখ্যার দিক থেকে ছেলেদের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম হলে সর্বোচ্চ ৯৯৪ জন ভোটার, এরপর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৫৪ জন এবং ২১তম হলে ৭৫২ জন। মেয়েদের মধ্যে বীর প্রতীক তারামন বিবি হলে ভোটার সংখ্যা ৯৮৩, রোকেয়া হলে ৯৫৭ এবং ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৮ জন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ২২৪টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি হলে রয়েছেন একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন শিক্ষক পোলিং এজেন্ট ও সহকারী পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৯টায় এবং চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি থাকছে। দায়িত্ব পালন করছেন দেড় হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মী, সঙ্গে সাত প্লাটুন বিজিবি এবং পাঁচ প্লাটুন আনসার সদস্যও মোতায়েন আছেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রায় ৬ হাজার নারী ভোটারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ভোট পড়লে তা নির্বাচনের ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। জাকসুর সাবেক চারবারের নির্বাচিত নেতা অধ্যাপক মোস্তফা এন মনসুর বলেন, “নারী ভোটাররা এবার নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছেন।”

কমপক্ষে ১০টি হলের ২০ জন ছাত্রী জানিয়েছেন, তারা এমন প্রার্থীদের সমর্থন দেবেন যারা নারী অধিকার ও জেন্ডার সমতার পক্ষে অবস্থান নেবেন।

জিএস পদের একমাত্র নারী প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী বলেন, “নারীদের জন্য রাজনীতি কঠিন হলেও, যোগ্যতা দিয়ে সব বাধা পেরোনো সম্ভব।” তার প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় বৈশাখীর জয়ের সম্ভাবনা বেড়েছে।

জিএস পদের অন্য প্রার্থীরা হলেন: মাজহারুল ইসলাম (সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট – শিবির সমর্থিত), তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম (শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম – গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ), শরণ আহসান (সম্প্রীতির ঐক্য), শাকিল আলী (স্বতন্ত্র)।

ভিপি পদের প্রার্থীরা: আবদুর রশিদ জিতু (স্বতন্ত্র, সাবেক ছাত্রলীগ), আরিফুজ্জামান (গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ), শেখ সাদী হাসান (ছাত্রদল), মাহফুজ ইসলাম মেঘ (স্বতন্ত্র, নাট্যকর্মী ও জুলাই আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক)।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com