দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। বর্তমানে সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করাতে হয় তাকে। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর তাকে রাজধানীর মহাখালীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে, ফলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে আজ তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ডা. আশীষ কুমার জানান, “রোগীর রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে গেছে, সংক্রমণও বেড়েছে। কিডনির সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য জটিলতাও রয়েছে। সব মিলিয়ে ফরিদা পারভীনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।”
সংগীতশিল্পীর স্বামী, যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম জানান, গত কয়েক মাসে চারবার আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ফরিদা পারভীনকে। ফুসফুস ও কিডনির সমস্যার কারণে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। হাঁটা বা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতেও পারছেন না তিনি। তিনি দেশবাসীর কাছে স্ত্রীর জন্য দোয়া চেয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফরিদা পারভীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুস, কিডনি ও থাইরয়েডজনিত বিভিন্ন সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সংগীতজগতে পথচলা শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে তালিম নিয়ে লালনসংগীতে নিজেকে নিবেদিত করেন। তার অনন্য গায়নশৈলী ও নিবেদন তাকে লালনসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তিতে পরিণত করেছে।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে লালনের গান শেখাতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।