রোববার রাতের আকাশে দেখা গেল এক দুর্লভ মহাজাগতিক দৃশ্য—পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এ সময় চাঁদ রুপালি আভা হারিয়ে কালচে লাল রঙ ধারণ করে, যাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানে বলা হয় ‘ব্লাড মুন’। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দেখা মিলেছে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয় রাত ৯টা ২৭ মিনিটে। রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হয় পূর্ণগ্রাস গ্রহণ, যা রাত ১২টা ১১ মিনিটে পৌঁছায় কেন্দ্রস্থলে। রাত ১২টা ৫৩ মিনিটে গ্রহণ কমতে শুরু করে এবং চাঁদ সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক রূপে ফেরে রাত ২টা ৫৬ মিনিটে। পূর্ণগ্রাস অংশটি স্থায়ী হয় প্রায় ৮২ মিনিট, যা ২০২২ সালের পর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ বলে জানিয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রগ্রহণ ঘটে যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে এবং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে। চাঁদ যখন সেই ছায়ার গভীরে প্রবেশ করে, তখন তার চেনা রুপালি আভা লালচে বা তামাটে রঙে রূপ নেয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সূর্যের আলো ছেঁকে সেই লাল রঙ চাঁদের ওপর ফেলে, যার ফলে তৈরি হয় ‘ব্লাড মুন’ দৃশ্য।
তবে প্রতি পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ হয় না, কারণ চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথের সঙ্গে হালকাভাবে হেলে থাকে। বছরে সাধারণত দুই থেকে তিনটি চন্দ্রগ্রহণ ঘটে এবং পৃথিবীর নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকেই সেগুলো দেখা যায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো। আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, ইন্দোনেশিয়ার হিলা দ্বীপ থেকে শুরু করে কেনিয়ার মোম্বাসা পর্যন্ত অঞ্চল থেকে চন্দ্রগ্রহণটি পুরোপুরি দেখা যাবে। এছাড়া এসব অঞ্চলের আশপাশেও আংশিক গ্রহণ দেখা গেছে।
তবে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা থেকে গ্রহণটি দেখা যায়নি।
রবিবার রাতের আকাশে চাঁদের এমন রঙ পরিবর্তন ও জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক নাটকীয়তা অনেককে মোহিত করেছে। শহরের আলো-ঝলমলে পরিবেশেও অসংখ্য মানুষ ঘরের ছাদে উঠে চাঁদের এই ভিন্ন রূপ উপভোগ করেন।