নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব এখন থেকে রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ এ সংক্রান্ত এক রায়ে বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের মূল রূপ পুনঃস্থাপন করা হলো, যেখানে বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরসহ সকল প্রশাসনিক বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাতে ক্ষমতা থাকার কথা বলা হয়েছিল।
একই সঙ্গে আদালত সরকারকে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই রায় এসেছে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে। উল্লেখ্য, ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর ইত্যাদি) রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং তা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োগ করা হবে।”
এর আগেও, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ এই অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেছিল। একই রিট আবেদনের ভিত্তিতেই এই নতুন রায় দেওয়া হলো।
রিটটি দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী—মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মো. আসাদ উদ্দিন, মো. মুজাহেদুল ইসলাম, মো. জহিরুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, শাইখ মাহদি, আব্দুল্লাহ সাদিক, মো. মিজানুল হক, আমিনুল ইসলাম শাকিল ও জায়েদ বিন আমজাদ।
রুলে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কেন সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত) বিধিমালা, ২০১৭–কে সংবিধানবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, এবং কেন সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দেওয়া হবে না।