আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১২ জনে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। দেশটির তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
তিনি জানান, শুধু কুনার প্রদেশেই প্রাণ হারিয়েছেন ৮০০ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। এছাড়া নানগারহার প্রদেশে নিহত হয়েছেন আরও ১২ জন এবং আহতের সংখ্যা ২৫৫।
ভূমিকম্পটি আঘাত হানে রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে (স্থানীয় সময়)। ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং ৮ কিলোমিটার গভীরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে ৫.২ ও ৪.৭ মাত্রার আরও দুটি আফটারশক অনুভূত হয়।
তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল কানি আগেই জানান, ভূমিকম্পে কুনারে ৬১০ জন নিহত ও ১,৩০০ জন আহত হন। তিনি জানান, প্রচুর ঘরবাড়ি ধসে গেছে। বেশিরভাগ আফগান এক বা দুইতলা কাদামাটির তৈরি বাড়িতে বসবাস করেন, যা ভূমিকম্পের সময় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে কুনারের নুরগাল জেলার কয়েকটি গ্রাম, যেগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, সড়ক অবরুদ্ধ হওয়ায় সেখানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
তালেবান কর্তৃপক্ষ ও জাতিসংঘ যৌথভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বিমান ব্যবহার করে ৪০টি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
কুনারের নুরগাল জেলার একজন কৃষি কর্মকর্তা ইজাজ উল হক ইয়াদ জানান, স্থানীয়রা নিজেরাই রাস্তা পরিষ্কারে এগিয়ে এসেছেন। তবে অনেক দূরবর্তী এলাকায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘অনেক নারী ও শিশু আতঙ্কে রয়েছেন। আমরা জীবনে এমন দৃশ্য কখনো দেখিনি।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও পাকিস্তান থেকে ফিরে আসা প্রায় ৪০ লাখ আফগানদের অনেকেই এসব ভূমিকম্প-আক্রান্ত গ্রামে বসবাস করছিলেন। তারা সেখানে নতুন জীবন শুরু করার চেষ্টা করছিলেন।
এই বিপর্যয়ের পর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শোক প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।