November 24, 2025, 2:03 am

চাকরি হারালেন ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক কর্মকর্তা জিলাল হোসেন

  • Update Time : Wednesday, August 20, 2025
  • 27 Time View

ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রথম সচিব (শ্রম) জিলাল হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, কর্মকালীন অবস্থায় আমেরিকায় পিএইচডি কোর্সে অংশ নিতে চার বছরের শিক্ষা ছুটির আবেদন করেছিলেন জিলাল হোসেন। তবে তার আবেদনে ফান্ডিং সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। এরপর ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি ৯ মাসের বেশি সময় অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হলে অসদাচরণ ও কর্মস্থল থেকে পলায়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কারণ দর্শানোর নোটিশে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সরকারি কর্ম কমিশনের মতামতের ভিত্তিতে তাকে ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

জনপ্রশাসন সূত্র জানায়, ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা জিলাল হোসেন ২০১৭ সালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্যে আসেন। পরবর্তীতে তিনি ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রথম সচিব (শ্রম) পদে নিযুক্ত হন।

সেখানে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রায় ২০ জন প্রবাসী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা দিয়ে তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন এবং তাদের সম্পদ দখল করেন। এমনকি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আদম ব্যবসায় নামেন এবং এ ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট প্রবাসী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে হাইকমিশনের ভেতর আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। কিছুদিন পর একইভাবে নির্যাতনের শিকার হন আরেক প্রবাসী কামরুল ইসলাম। নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হলে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেও জিলাল হোসেন কৌশলে রক্ষা পান।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, মালয়েশিয়ার নাগরিক সারা বিনতে আকিলকে ঘুষ না দেওয়ায় তার পাসপোর্ট থেকে আগেই দেওয়া ভিসার সিল কেটে ফেলা হয়। একইভাবে প্রবাসী মেহেদী হাসানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে তাদের হয়রানি করা হয়। ঘুষ না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভিডিও তৈরি সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগ এনে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

ঘটনাগুলোর সূত্র ধরে জিলাল হোসেনের কর্মকাণ্ড তদন্তে আসে এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর শেষ পর্যন্ত সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com