মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক সহিংসতা ও সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসতে থাকা প্রায় ৩০০–৪০০ রোহিঙ্গা নাফ নদীর ওপারে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে তারা এপারে ঢুকতে পারছেন না।
রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম।
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৭-এর নেতা মোহাম্মদ কামাল জানান, “প্রতিদিন কিছু রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বিজিবিকে ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্পে ঢুকে পড়ছে। বর্তমানে ৩০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের লালদ্বীপের কাছে জাইল্যা দ্বীপের আশপাশে অবস্থান করছে। সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে তারা ঢুকতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে। আর একইসঙ্গে আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। এই ত্রিমুখী সংঘর্ষের মধ্যে সবচেয়ে বিপদে পড়েছে নিরীহ রোহিঙ্গারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গা প্রবেশ নিয়ে আমাদের কাছে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য নেই। তবে কয়েক দিন আগে মংডুতে বিমান হামলা হয়েছে—এই খবর আমরা পেয়েছি।”
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “সীমান্তে কড়া নজরদারি চলছে। ফলে অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে সমুদ্র উত্তাল থাকায় নৌপথেও প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। এতে করে অনেকে সীমান্তের ওপারে আটকা পড়েছে।”
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী ও আরাকান আর্মির মধ্যে গোলাগুলির খবরও পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘ ও সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারে এখন পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত দেড় বছরে নতুন করে অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের মধ্যে।