জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সেনাপ্রধান বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ইতোমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে এবং সরকার নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে নিরপেক্ষভাবে এবং আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, সেনাসদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে মোতায়েন রয়েছে— যা অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “সবার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে, দূরত্ব ঘোচাতে হবে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য ও অপপ্রচারের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “মন খারাপ করার কিছু নেই। যারা এ ধরনের মন্তব্য করছে, তারা আমাদের সন্তানের বয়সী তরুণ। তারা যখন বড় হবে, তখন নিজেদের ভুল বুঝবে এবং লজ্জিত হবে।”
সামাজিক মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে করা অপপ্রচারে প্রতিক্রিয়া না দেখানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এ ধরনের গুজব বা অপপ্রচারে জড়িতদের নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে। সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কোনো ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ ভিত্তিতে শাস্তি দেওয়া হবে না— কেবল প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এক সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্তাধীন বলেও জানান সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, “যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর কেউ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারবে না।”
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা, জিজ্ঞাসাবাদ, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধসহ নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়েও আলোচনা করেন।
প্রায় ৩৮ মিনিটের বক্তব্য শেষে সেনাপ্রধান এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কর্মকর্তাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বলে বৈঠকে উপস্থিত অন্তত চারটি সূত্র ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে।