হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের যন্ত্রপাতির একাংশের ওয়ারেন্টি মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বাকি যন্ত্রাংশগুলোরও মেয়াদ দ্রুত শেষ হয়ে আসছে। ফলে যন্ত্রপাতির কার্যকারিতা নিয়ে যেমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তেমনি বাড়ছে অতিরিক্ত ব্যয়ের ঝুঁকি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে অন্তত ২০ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে কিছু যন্ত্রের ওয়ারেন্টি শেষ, আবার কিছু গুদামে সংরক্ষিত থাকায় বিকল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, টার্মিনাল চালুর আগেই অধিকাংশ যন্ত্রের ওয়ারেন্টি শেষ হয়ে যাবে, ফলে এগুলো মেরামতে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানিয়েছে, তৃতীয় টার্মিনালের ৯৯.৮৮ শতাংশ কাজ শেষ হলেও এখনো ক্যালিব্রেশন, টেস্টিং ও পূর্ব অংশের কাজ বাকি। তাছাড়া টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি ও বিপুল জনবল নিয়োগও এখনো হয়নি। এ পরিস্থিতিতে কবে টার্মিনাল চালু হবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
বেবিচকের অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং সদস্য এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মাহবুব খান বলেন, “যন্ত্রপাতিগুলো সচল রাখতে আমরা নিয়মিত টেস্ট করছি। কোন যন্ত্রের ওয়ারেন্টি শেষ হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত টার্মিনাল চালুর চেষ্টা চলছে।”
যেসব যন্ত্রের ওয়ারেন্টি শেষ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে: পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, পাম্প, নিরাপত্তা কন্ট্রোল, ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ও আলোকসজ্জা। এছাড়া ব্যাগেজ স্ক্যানিং, ফ্লাইট ইনফরমেশন, সিসিটিভি, ফায়ার অ্যালার্মসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি যাত্রীসেবায় বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনালে দিনে গড়ে ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বছরে আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।