November 24, 2025, 3:23 am

পদ্মার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, কুষ্টিয়ার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা

  • Update Time : Wednesday, August 13, 2025
  • 28 Time View

ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে জেলার দৌলতপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৮৯ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার (১৩.৮০ সেন্টিমিটার) মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচে। একই সময় গড়াই নদীর পানি দাঁড়িয়েছে ১১.২৭ সেন্টিমিটার, বিপৎসীমা ১২.৭৫ সেন্টিমিটার। আগস্টের শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ সেন্টিমিটার হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পানির এই লাগাতার বৃদ্ধিতে দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী এলাকার ৪০-৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বহু রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে গেছে। চরাঞ্চলের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

পানিতে ডুবে গেছে মরিচ, পাট ও ধানের ক্ষেত। ফলে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই বাথান ভেঙে গরু-মহিষ নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন।

চরাঞ্চলের মানুষ জানান, আবাদি জমি ও রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বাড়িঘরে এখনো পানি না উঠলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। চিলমারী ইউনিয়নের মানিকের চরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ইতোমধ্যে বাড়ির উঠানে পানি প্রবেশ করেছে।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। নিচু এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে গেছে। ঘরবাড়ি প্লাবিত না হলেও অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, নদীর ওপারে বসবাসরত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানির মধ্যে রয়েছে। আবাদি জমি সম্পূর্ণভাবে ডুবে গেছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে জরুরি সহায়তা বাড়ানো হবে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, প্লাবিত এলাকাগুলোতে জরুরি প্রস্তুতি রয়েছে। খাদ্য মজুদ রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান স্থগিত করা হয়েছে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুজ্জামান জাহিদ বলেন, প্রতিদিন পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বাড়ছে। তবে এই ধারা কতদিন চলবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে আসায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বহু মানুষ পানিবন্দি, ফসল নষ্ট, রাস্তা ও স্কুল প্লাবিত। প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে, তবে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে দুর্যোগ আরও বাড়তে পারে।

Spread the love
More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved
Theme Developed BY ThemesBazar.Com