২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে শুরু হওয়া গাজার যুদ্ধ এখনো থামেনি। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই সংঘাতে হামাসকে পরাজিত করতে ব্যর্থ ইসরায়েল এবার গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১৭ আগস্ট ইসরায়েলজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কয়েকটি স্থানীয় সংগঠন।
রোববার ইসরায়েলি দৈনিক টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানায়, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে হামাসের হাতে জিম্মি ও নিহত ইসরায়েলি সেনাদের পরিবারের সদস্যদের কয়েকটি সংগঠন। তারা বলছে, গাজা দখলের সিদ্ধান্ত জিম্মিদের জীবন আরও বিপন্ন করে তুলবে এবং সেনাদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়াবে।
ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘অক্টোবর কাউন্সিল’ নামের একটি সংগঠন। এ কর্মসূচিতে বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও সমর্থন জানিয়েছেন।
তবে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জিম্মিপরিবারভিত্তিক সংগঠন ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ এই ধর্মঘটে সরাসরি অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেয়নি। পাশাপাশি দেশটির প্রধান শ্রমিক সংগঠন ‘হিস্তাদ্রুত’ জানিয়েছে, তারা এই ধর্মঘটে অংশ নেবে না।
ধর্মঘটের ডাক এমন এক সময়ে এলো, যখন সামরিক বাহিনীর আপত্তি সত্ত্বেও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গাজা সিটি ও আশপাশের অঞ্চল দখলের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে। আইডিএফ বা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই ধরনের সামরিক অভিযানে জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে, সেনাদের ঝুঁকি বাড়বে এবং গাজায় চলমান মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
রোববার তেল আবিবের কিরিয়া সামরিক ঘাঁটির বিপরীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৭ আগস্টের ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়। আয়োজকরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সাধারণ নাগরিকদের সেদিন কাজ না করে ‘অর্থনীতির চাকা থামিয়ে দেওয়ার’ আহ্বান জানান।
তবে আয়োজকরা স্পষ্ট করেছেন, এই ধর্মঘট ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে নয়—এর মূল উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলি জিম্মিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেনাদের প্রাণ রক্ষা করা এবং আর কোনো পরিবার যেন শোকাহত না হয়—তা নিশ্চিত করা।