ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর বল হাতেও তাণ্ডব চালালেন অলরাউন্ডার রিজান হোসেন। ৯৬ বলে ৯৫ রানের ঝকঝকে ইনিংসের পর মাত্র ৩৪ রানে নিলেন ৫ উইকেট। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের মাটিতে ত্রিদেশীয় অনূর্ধ্ব-১৯ সিরিজের শিরোপা জিতে নিলো বাংলাদেশ।
রোববার হারারেতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৩ রানে হারিয়েছে টাইগার যুবারা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে তোলে ২৬৯ রান। জবাবে প্রোটিয়ারা গুটিয়ে যায় ৪৮.৪ ওভারে ২৩৬ রানে।
উদ্বোধনী জুটিতে ৯.৩ ওভারে ৪১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ, তবে এরপর হঠাৎই দুই ওপেনার রিফাত বেগ (১৬) ও জাওয়াদ আবরার (২১) ফিরে গেলে পড়ে চাপ। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমও ব্যর্থ হন (৭ রান)।
চতুর্থ উইকেটে পরিস্থিতি সামাল দেন রিজান হোসেন ও কালাম সিদ্দিকি। দুজনে গড়েন ১১৭ রানের জুটি। কালাম ৭৬ বলে ৬৫ রান করে আউট হলেও রিজান খেলেন দলের সর্বোচ্চ ইনিংস—৯৫ রান, ১০টি চারে সাজানো। মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি।
শেষদিকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ২৯ বলে ৩৮ এবং সামিউন বশির ৮ বলে ১৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
২৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে তোলে ৫৯ রান। তবে আল ফাহাদ প্রথম ধাক্কাটা দেন—আউট করেন ৪০ রান করা ল্যাগাডিয়েনকে। এরপর আরেক ওপেনার জরিককেও (১৯) ফিরিয়ে দেন ফাহাদ।
তৃতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও মাঝের ওভারগুলোতে রিজান ও স্বাধীন ইসলামের বোলিংয়ে ধুঁকতে থাকে প্রোটিয়ারা। রিজান তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ ৫ উইকেট, যার মধ্যে শেষ দিকে এমবাথা (২৯), সোনি (৩৪) ও ব্যাসনকে আউট করে শেষ করেন প্রতিপক্ষের আশা।
বাংলাদেশের হয়ে ফাহাদ নেন ৩ উইকেট এবং স্বাধীন নেন ২টি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাত ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁলেও কেউই ফিফটির দেখা পাননি। ল্যাগাডিয়েনের ৪০ রান ছিল সর্বোচ্চ।
শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই রিজান হোসেন ছিলেন ম্যাচের নায়ক। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই আরও একবার বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিল টাইগার যুবারা।