বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছে আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট (আই-ইউনিট)। সংস্থাটির হাতে আসা একটি গোপন ফোনালাপের রেকর্ডে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি একদম। এখন লিথাল ওয়েপনস (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”
আই-ইউনিট জানায়, গত বছরের ১৮ জুলাই ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কর্তৃক রেকর্ড করা এই ফোনালাপে শেখ হাসিনা তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর সঙ্গে কথা বলেন। এতে তিনি জানান, এতদিন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি আর বাধা দিচ্ছেন না।
রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে অডিওটি সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়েছে আল-জাজিরা। কণ্ঠ মিলিয়ে (ভয়েস ম্যাচিং) বক্তাদের পরিচয়ও নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
একই ফোনালাপে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর আত্মীয় ও তৎকালীন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমন নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, “যেখানেই গ্যাদারিং দেখবে, সেখানে ওপর থেকে… এখন ওপর থেকে করা হচ্ছে, অলরেডি শুরু হয়ে গেছে কয়েকটা জায়গায়। কিছু সরে গেছে।”
প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনা চলমান আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেন এবং পরে ভারত চলে যান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তথ্য অনুযায়ী, এ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অন্তত ১,৪০০ জন নিহত এবং ২০,০০০ এর বেশি আহত হয়েছেন।
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।